নাগরিক সেবা

জমি কেনার চুক্তিপত্র ২০২৫ । এগুলো না দেখে জমি ক্রয় করতে যাবেন না

জমি কেনার আগে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যাচাই করা প্রয়োজন। যেমন, জমির দলিল, ওয়ারিশ সনদ, খাজনার দাখিলা, সিএস/এসএ/আরএস/ মহানগর/ মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর ইত্যাদি যাচাই করতে হবে। এছাড়া, জমির মালিকানা, খাজনা পরিশোধ এবং যাতায়াতের রাস্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে– জমি কেনার চুক্তিপত্র ২০২৫

জমির দলিল (Sale Deed) করা কি জরুরি? হ্যাঁ। জমির মালিকানা প্রমাণ করার জন্য জমির দলিল (Sale Deed) খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিক্রেতার নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য এই দলিলের মধ্যে উল্লেখ থাকে। যদি জমি ওয়ারিশি সূত্রে আসে, তবে ওয়ারিশ সনদের মাধ্যমে উত্তরাধিকারী প্রমাণ করতে হয়। এতে মৃত ব্যক্তির নাম, তার ওয়ারিশদের নাম এবং তাদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগাভাগির হিসাব উল্লেখ থাকে। জমি কেনা ক্রেতাকে বিক্রেতার খাজনা পরিশোধের প্রমাণ দেখতে হয়। নিয়মিত খাজনা পরিশোধের প্রমাণ থাকলে, বুঝা যায় যে জমিটি কোনো প্রকার জটিলতা থেকে মুক্ত।

পর্চা যাচাই করতে হবে কি? হ্যাঁ। সিএস/এসএ/আরএস/ মহানগর/ মিউটেশন পড়চা (CS/SA/RS/Metropolitan/Mutation Porcha) এই কাগজপত্রগুলো জমির মালিকানা এবং সীমানা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করে। ভূমি অফিসের মাধ্যমে এই কাগজপত্র যাচাই করা উচিত। ডিসিআর (Demand Certificate) এই কাগজটি জমির ট্যাক্স বা খাজনার পরিমাণ এবং পরিশোধের তারিখ সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করে। জমির মালিকানা (Ownership) বিক্রেতা যে জমির মালিক, তা নিশ্চিত করা দরকার। তার কাছে জমির মূল দলিল এবং অন্যান্য প্রমাণপত্র আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।

খাজনা পরিশোধ রশিদ দেখতে হবে? হ্যাঁ। Tax Payment জমির খাজনা পরিশোধের হিসাব যাচাই করে দেখতে হবে যে, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে কিনা। যাতায়াতের রাস্তা (Access Road) জমির সাথে যাতায়াতের রাস্তা আছে কিনা, তা মৌজা ম্যাপ বা সরেজমিনে যাচাই করে নিশ্চিত করতে হবে। বাটোয়ারা দলিল (Partition Deed) একাধিক মালিক থাকলে বাটোয়ারা দলিলের মাধ্যমে জমির ভাগাভাগির হিসাব দেখতে হয়।

জমি কেনার চুক্তিপত্র ২০২৫ । কিভাবে জমি রেজিস্ট্রেশন করতে হয়

মালিক ছাড়া অন্য কেউ কি জমি বিক্রি করতে পারে? হ্যাঁ।  পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি যদি বিক্রেতা জমির মালিক না হন, তবে তার কাছে জমির মালিকের কাছ থেকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি থাকতে হবে, যাতে সে জমির মালিকের পক্ষে জমি বিক্রি করতে পারে। জমিটি খাস কিনা Is it a Government Land খাস জমি বা সরকারের অধিগ্রহণকৃত জমি কিনা, তা ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত করা উচিত। এই বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই করে জমি কিনলে প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ভবিষ্যতের আইনি জটিলতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

বায়নানামা (পূরণকৃত নমুনা) পিডিএফ ডাউনলোড

জমি সংক্রান্ত ডকুমেন্ট ২০২৫ । ল্যান্ড কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট কি লাগে?

  1. ইউনিয়ন ভূমি অফিস: নামজারী, খাজনা, ডিসিআর, রেজিস্টার-২ (পিও (৯৮/৭২), নিলাম রেজিস্টার, এস এন্ড টি অ্যাক্টের ৯৭ ধারা অনুযায়ী খোঁজ নেয়া যাচাই করা
  2. ২. সাব-রেজিস্ট্রি অফিস: দলিল, বায়া দলিল, হেবা, এওয়াজ বদল, বণ্টননামা, আমমোক্তারনামা যাচাই করা:
  3. সেটেলমেন্ট অফিস: পর্চা, খতিয়ান, বিভিন্ন রেকর্ড যাচাই
  4. জেলা রেকর্ড রুম: কোনো রেকর্ড পাওয়া না গেলে আবেদন করে সংগ্রহ
  5. জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসারের অফিস: সরকারি কোনো দাবী পাওনা আছে কিনা, কোনো মামলা আছে কিনা যাচাই করা
  6. অগ্রক্রয় সম্পর্কে খোজ নেয়া
  7. সরকারি স্বার্থ সম্পর্কে খোঁজ নেয়া।
  8. নকশা নিয়ে সরেজমিনে গমন, চৌহন্দি, দখল, বিরোধ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান নেয়া
  9. . পেন্টাগ্রাফের সাহায্যে দাগ/দাগের অংশ সঠিকভাবে চিহ্নিতকরণ
  10. বিভিন্ন রেকর্ড, খতিয়ান, দলিল ইত্যাদির ধারাবাহিকতা যাচাই করা
  11. জমির তফসিল, চৌহদ্দী সঠিকভাবে নির্ধারণ করা
  12. দলিল লিখনে নির্ধারিত ফরমে সকল বিষয় প্রতিফলিত হচ্ছে কিনা তা (অভিজ্ঞ মোহড়ার মাধ্যমে) যাচাই করা
  13. দালাল/ অসাধু ব্যক্তি হতে সাবধানতা অবলম্বন করা

জমি কেনার সময় কি কি কাগজ লাগে?

জমি কেনার সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে রয়েছে জমির দলিল, খাজনার দাখিলা, সিএস/এসএ/আরএস/ মহানগর খতিয়ান, মিউটেশন পরচা, ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), এবং ডিসিআর। এছাড়াও, জমি বন্ধক মুক্ত কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য এনকাম্ব্রান্স সার্টিফিকেট বা অন্য কোনো প্রমাণপত্রও প্রয়োজন হতে পারে।

জমি কেনার বায়না চুক্তিপত্র কখন করতে হয়? জমি কেনার বায়না চুক্তিপত্র বা বায়না দলিল সাধারণত ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে জমি কেনার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা ও চুক্তি করার পর করা হয়। এই চুক্তিটি ভবিষ্যতের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য সম্পাদিত হয় এবং এতে জমির আংশিক মূল্য পরিশোধের শর্ত থাকে। বায়না চুক্তিটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রেশন করা আবশ্যক, যা বায়না চুক্তি সম্পাদনের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে করতে হয়।

বায়না দলিল বাতিল করার জন্য, দলিলটি রেজিস্ট্রি করা থাকলে, বাতিলকরণ দলিল করতে হবে।  উভয়পক্ষের সম্মতিতে বাতিলকরণ দলিল প্রস্তুত করে রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হয়।  এরপর, দলিল বাতিলকরণের জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হয়।

যদি রেজিস্ট্রি করা না থাকে, তবে বাতিলকরণের জন্য অন্য কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে    
     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *