সরকারি কর্মচারীদের ৯ম পে-স্কেলের দাবি: বৈষম্যহীন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেল, তথা নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের মূল প্রস্তাবনায় বর্তমান বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করে একটি নতুন, যুগোপযোগী এবং আরও ন্যায্য বেতন কাঠামো প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। সর্বশেষ পে-স্কেল ২০১৫ সালে কার্যকর হয়েছিল, এরপর থেকে আর নতুন কোনো পূর্ণাঙ্গ বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়নি।
মূল দাবিগুলো হলো:
-
সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন: কর্মচারীদের প্রস্তাবিত কাঠামোয় সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন হবে ১,৪০,০০০ টাকা।
- বৈষম্যহীন বেতন স্কেল: বর্তমানে নিম্ন ও উচ্চ গ্রেডের মধ্যে বেতনের বিশাল ব্যবধান রয়েছে। এই বৈষম্য কমাতে কর্মচারীরা ১:৪ অনুপাতে একটি বেতন কাঠামো তৈরির দাবি জানিয়েছেন।
-
গ্রেড সংখ্যা হ্রাস: বিদ্যমান গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে মোট ১২টি গ্রেডে সীমিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা বেতন কাঠামোকে আরও সহজ ও যৌক্তিক করবে।
- বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট: জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইনক্রিমেন্ট নিশ্চিত করতে মূল্যস্ফীতির হার অনুযায়ী বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট সমন্বয়ের দাবি জানানো হয়েছে।
- ভাতা পুনর্বিবেচনা: বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও পরিবহন ভাতার মতো অতিরিক্ত ভাতাগুলো বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুনর্বিবেচনা ও বৃদ্ধির দাবি তোলা হয়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের মতে, বর্তমান বেতন কাঠামো দিয়ে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে জীবনযাত্রার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই কারণে কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে এবং তাদের কর্মোদ্দীপনা কমে যাচ্ছে। তারা বিশ্বাস করেন, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন হলে এটি শুধু তাদের আর্থিক দুর্দশা কমাবে না, বরং কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং কাজের প্রতি আরও বেশি আগ্রহ তৈরি করবে।
সরকারি কর্মচারীরা আশা করছেন, বর্তমান সরকার তাদের এই যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করবে এবং প্রস্তাবিত ৯ম পে-স্কেলটি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকেই কার্যকর করবে। তাদের এই দাবি এখন সরকারের উচ্চ মহলের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।