মুসলিম উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর ২০২৪ । মুসলমান হলে ছেলে ও মেয়ে পাবে ২ঃ১ হারে প্রাপ্য হবে

সম্পত্তি বন্টন আইনগুলো জটিল এবং এগুলো মনে রাখা খুবই কঠিন- যারা এগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করে কেবল তাই সম্পদ বা জমির হিসাব সম্পর্কে ভাল ধারণা পোষণ করে থাকে–ওয়ারিশ সম্পত্তি বন্টন ২০২৪

সম্পত্তি বন্টন নিয়ে ঝামেলা কি? –জনাব বাকের ৪৫ বছর বয়সে হঠাৎ স্ট্রোক করে মারা গেল। তিনি কৃষিকাজ করতেন এবং ৩৩০ শতাংশ জমি ও বসত বাড়ি রেখে গেছেন। উত্তরাধিকারী হিসেবে গেছেন বাবা, স্ত্রী শাবানা, দুই ভাই জামালা ও কামাল ও এক মেয়ে কবিতা। বাকেরের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ও মেয়েকে কোন সম্পত্তির ভাগ দিয়ে চাচ্ছে না বাবা ও ভায়েরা, একন অসহায় অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে শাবানা বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। আসলেই কি তিনি কোন সম্পত্তির ভাগ পাবে না?

এডভোকেট ছাড়া কি অংশ সম্পর্কে জানা যায় না? যায়। কোন আইনজীবী বা কোন জানুয়া ব্যক্তির নিকট না গিয়েও এখন আপনি সরকার ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে হিসাবটি করতে পারেন। অংশ পাবে কি পাবেনা সেটিও জানতে পারেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, আপনি অংশও দেখতে পারবেন এবং সে মোতাবেক বিধিও জানতে পারবেন। উত্তরাধিকার.বাংলা ক্যালকুলেটরটি আপনার জন্য বিধি খুজেঁ বের করবেন এবং অংশ দেখাবে।

কন্যা তাহলে ৯০ শতাংশের মধ্যে কত অংশ পাবে? স্ত্রী এবং কন্যাকে অংশ বা হিস্যা প্রদানের পর পিতা ও ভাইয়েরা অংশ পাবেন। তাই এ কথা সম্পূর্ণ ভুল এবং নীতি বর্হিভূত যে, স্ত্রী ও কন্যা কোন অংশ পাবে না। চলুন বিধি জেনে নিই, স্ত্রী ১/৮ অংশ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে। কন্যা ১/২ অংশ পাবে যখন একজন মাত্র কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে। পিতা ১/৬ অংশ পাবে যখন সন্তান বা সন্তানের সন্তান থাকে। পিতা একমাত্র অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে অবশিষ্ট সম্পতির উত্তরাধিকারী হয়। যেখানে একমাত্র কন্যা হিসেবে মোট সম্পদের অর্ধেক পাবেন সেখানে তাকে বঞ্চিত করা সম্পূর্ণ অন্যায় তাই কন্যা এবং স্ত্রী বঞ্চিত সম্পদের জন্য মামলা করতে পারবেন।

মুসলিম উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর । উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে মুহুর্তেই সম্পত্তির হিসাব করুন

সম্পত্তি হিসাবের নিয়ম কি?  স্ত্রী ১/৮ অংশ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে এবং কন্যা অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবে যখন পুত্র থাকে । পুত্র ও কন্যা ২:১ অনুপাতে অবশিষ্ট সম্পতির উত্তরাধিকারী হয়। মুসলমান হলে ছেলে ও মেয়ে পাবে ২ঃ১ হারে।

Caption: Uttaradhikar Calculator অথবা  সহজেই সম্পত্তির হিসাব অ্যাপ ডাউনলোড

ওয়ারিশ সম্পত্তি বন্টন ২০২৪ । সম্পত্তি বা জমির কতটুকু কে পাবে চলুন জেনে নিই

  • স্বামীর অংশঃ স্বামী ২ ভাবে মৃত স্ত্রীর সম্পত্তির ভাগ পেয়ে থাকে। স্বামী কখনো তাঁর মৃত স্ত্রীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। মৃত স্ত্রীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে।
  • স্ত্রীর অংশঃ স্ত্রীও ২ ভাবে তাঁর মৃত স্বামীর সম্পত্তি পেয়ে থাকে। বিধবা স্ত্রী কোন ভাবে তাঁর স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা তাঁদের পুত্রের সন্তান থাকলে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৮ অংশ পাবে। যদি মৃত স্বামীর কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তান কেউই না থাকলে তবে স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তির ১/৪ অংশ পাবে। স্ত্রী একাধিক হলেও সবাই মিলে ১/৪ অংশ সমান ভাগেই পাবে।
  • বাবার অংশঃ বাবা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ৩ ভাবে হয়ে থাকে। যদি মৃত সন্তানের পুত্র, পুত্রের পুত্র বা পুত্রের পুত্রের পুত্র এভাবে যতই নিচের হোক না কেন যদি থাকে, তবে মৃত সন্তানের পিতা পাবেন সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ। যদি মৃত সন্তানের শুধু মাত্র কন্যা সন্তান বা তাঁর পুত্রের কন্যা সন্তান থাকলে তবে পিতা সন্তানের সম্পত্তির ১/৬ অংশ পাবেন। এই ক্ষেত্রে কন্যাদের ও অন্যান্যদের দেয়ার পর অবশিষ্ট যে সম্পত্তি থাকবে তাও পিতা পাবেন। আর যদি মৃত সন্তানের কোন পুত্র-কন্যা বা পুত্রের সন্তান কিছুই না থাকে তাবে বাকী অংশীদারদের তাঁদের অংশ অনুযায়ী দেয়ার পর অবশিষ্ট যা থাকবে তার সবটুকুই বাবা পাবেন। তবে মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান ও বাবা কেউ না থাকলে তাঁর সম্পত্তি তাঁর জীবিত ভাই বা ভাইরা পাবে। আবার ভাই না থাকলে তাঁর ভাইয়ের সন্তানরা পাবে।
  • মায়ের অংশঃ মা তাঁর মৃত সন্তানের সম্পত্তি পেয়ে ৩ ভাবে পেয়ে থাকে। – মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নেরই হোক থাকলে অথবা যদি মৃত ব্যক্তির আপন, পূর্ণ বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাইবোন থাকলে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ (১/৬) পাবেন। মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে এবং মৃত ব্যক্তির যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) পাবেন। কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি যত নিম্নের হোক না থাকলে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকলে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রীর অংশ বাদ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তার তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) মাতা পাবেন। মৃত ব্যক্তির এক ভাই থাকলেও মাতা ১/৩ অংশ পাবেন।
  • পুত্র সন্তানের অংশঃ মৃত ব্যক্তির ছেলে বা ছেলেরা সকল ক্ষেত্রেই সম্পত্তি পায়। যেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ে রয়েছে সেই ক্ষেত্রে ছেলে বা ছেলেরা, মেয়ে বা মেয়েদের চেয়ে দ্বিগুন সম্পত্তি পাবে। মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে মাতাপিতা ও স্বামী-স্ত্রী নির্দিষ্ট সম্পত্তি পাওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে মেয়ের মধ্যে বন্টন করা হবে। তবে মেয়ে না থাকলে অংশীদারদের অংশ দেয়ার পর অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে বাকী সম্পূর্ণ সম্পত্তি ছেলে বা ছেলেরাই পাবে।
  • কন্যা সন্তানের অংশঃ উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে কন্যারা তিনভাবে মাতাপিতার সম্পত্তি পেতে পারে। একমাত্র কন্যা হলে তিনি রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই ভাগের এক ভাগ বা (১/২) অংশ পাবে। একাধিক মেয়ে হলে সবাই মিলে সমানভাগে তিন ভাগের দুই ভাগ বা (২/৩) অংশ পাবে। যদি পুত্র থাকে তবে পুত্র ও কন্যার সম্পত্তির অনুপাত হবে ২:১ অর্থাৎ এক মেয়ে এক ছেলের অর্ধেক অংশ পাবে। যাহোক কন্যা কখনো মাতাপিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয় না। পিতা মারা গেলে তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় যে সম্পত্তি পেতেন তা তাঁর মৃত্যুর পরও তাঁর উত্তরাধিকারীরা পাবে। ১৯৬১ সালের আগে এই নিয়ম ছিল না। পরে একটি আইন পাস করে এই নিয়ম চালু করা হয়। কারণ এতিমরা যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেই সম্পর্কেও ইসলামে নির্দেশ দেয়া আছে। আবার মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে কোন সন্তানকে ত্যাজ্য বলে ধরা হয় না। ফলে সম্পত্তি থেকে তাকেও বঞ্চিত করা যায় না। তবে কোন ব্যক্তি রেজিস্ট্রিকৃতভাবে সম্পত্তি দান বা হস্তান্তর করে গেলে এবং সন্তানকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে সন্তানের অংশ উল্লেখ না করে গেলে ঐ সন্তান আর সম্পত্তি পাবে না। সৎ ছেলে-মেয়ে, সৎ বাবা বা সৎ মায়ের সম্পত্তি পায় না। একই ভাবে সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না।

হত্যাকারী কি সম্পত্তি উত্তরাধিকার হয়?

না। কেউ কাউকে হত্যা করলে হত্যাকারী তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। জীবিত থাকা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কেউ কারো সম্পত্তি পাবে না। জারজ সন্তান তার মা ও মায়ের আত্নীয়দের থেকে সম্পত্তি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পাবে (মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে)। মৃত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকার না থাকলে এবং তা তিনি জীবিতকালে কাউকে না দেয়ার ব্যবস্থা করে গেলে সরকার তার সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে। উত্তরাধিকার সম্পর্কে উপরোক্ত সাধারণ কয়েকটি বিষয় মনে রাখলে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টনের জটিলতা দূর হবে। মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন । মৃত ব্যক্তি রেখে গেল বাবা, এক স্ত্রী, দুই ভাই ও এক মেয়ে, ভাগাভাগি কিভাবে?

https://reportbd.net/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%ae/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *