এইমাত্র পাওয়া

আরও বাড়ছে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়: ইতিবাচক অবস্থানে সরকার

আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বিবেচনা করে দ্বিতীয় দফায় বাড়তে যাচ্ছে আয়কর রিটার্ন জমার সময়সীমা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, করদাতাদের সুবিধার্থে সময়সীমা ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সময়সীমা কতদিন বাড়ছে?

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুযোগ রয়েছে। যদি সময়সীমা এক মাস বাড়ানো হয়, তবে করদাতারা ৩১ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। আর যদি ১৫ দিন বাড়ানো হয়, তবে শেষ সময় হবে ১৫ জানুয়ারি

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, এ বছর ই-রিটার্ন বা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করায় অনেক করদাতার প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে। এছাড়া আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ব্যস্ততা ও করদাতাদের পক্ষ থেকে আসা অনুরোধের প্রেক্ষিতে সরকার সময় বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক।

ই-রিটার্নে অভাবনীয় সাড়া

এনবিআরের তথ্যমতে, চলতি ২০২৫-২৬ করবছরে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে:

  • নিবন্ধন: এখন পর্যন্ত ৪২ লাখেরও বেশি করদাতা অনলাইনে নিবন্ধিত হয়েছেন।

  • রিটার্ন দাখিল: ২৬ লাখেরও বেশি করদাতা ইতিমধ্যে তাদের রিটার্ন জমা দিয়েছেন।

  • দৈনিক নিবন্ধন: প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজারেরও বেশি নতুন করদাতা অনলাইন সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যেহেতু এবার অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক, তাই সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে সরকার সময় বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।

সহজ হচ্ছে রিটার্ন প্রক্রিয়া

এবার অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা হলো, কোনো কাগজের হার্ডকপি বা স্ক্যান কপি আপলোড করতে হচ্ছে না। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্যাদি (যেমন: বেতনের বিবরণ, ব্যাংক মুনাফা, ভাড়ার চুক্তিপত্র ইত্যাদি) ফরমে ইনপুট দিলেই চলছে।

ই-রিটার্ন জমা দিতে যা প্রয়োজন: ১. করদাতার নিজস্ব টিআইএন (TIN) নম্বর। ২. বায়োমেট্রিক করা নিজস্ব মোবাইল নম্বর। ৩. অনলাইনে বিকাশ, রকেট, নগদ বা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কর পরিশোধের সুবিধা।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব প্রবীণ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ব্যতীত সকল ব্যক্তিগত করদাতার জন্য এবার অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এনবিআর কর্মকর্তারা মনে করছেন, আয়কর ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাল হলে কর ফাঁকি কমবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে। এই প্রক্রিয়াকে আরও জনপ্রিয় করতে আগামী বছর নতুন অ্যাপস তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে স্মার্টফোন থেকেই রিটার্ন দাখিল করা যাবে আরও সহজে।

যেকোনো সমস্যার সমাধানে এনবিআরের কল সেন্টার (০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১) অথবা প্রতিটি কর অঞ্চলের হেল্প ডেস্ক থেকে সরাসরি সহায়তা নিতে পারছেন করদাতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *