এইমাত্র পাওয়া

FLAT ক্রয়ের কেনার নিয়ম ২০২৪ । ফ্ল্যাট কেনার আগে ক্রেতাকে যা বুঝতে হবে

সবকিছু বিক্রি করে দিয়ে ফ্ল্যাট কেনা ভাল সিদ্ধান্ত নাকি মন্দ সিদ্ধান্ত সেটি নিয়েই মূলত আজ আলোচনা করা হবে-বুঝতে চেষ্টা করবো তাদের জন্য ফ্ল্যাট কেনা সুবিধাজনক–FLAT ক্রয়ের কেনার নিয়ম ২০২৪

ফ্ল্যাট কিনে বিপদে পড়ার আগে জেনে নিন- ঢাকা বা ঢাকার বাইরে নিজের জন্য নিরাপদ ও আবাসযোগ্য একটি সুন্দর ফ্ল্যাট কিনতে চাই। কিন্তু কিছু বিষয় খেয়াল না করে ফ্ল্যাট বুকিং দিয়ে বা ফ্ল্যাট কিনে বিপদে পড়ি। যদি আপনি নিদ্ধান্ত নেন যে, ফ্ল্যাট ক্রয় করবেন, তাহলে যে ডেভেলপার থেকে ফ্ল্যাটটি কিনবেন, আগে যাচাই করুন। সেই ডেভেলপারের এপার্টেমেন্ট বিল্ডিং টি নির্মান কাজ শেষ করার মতো সামর্থ আছে কিনা। সেটি বুঝতে হলে, একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার আগেই ডেভেলপারের অফিসে যান। টেকনিক করে ঐ ডেভেলপারের কোন্ ব্যাংকে একাউন্ট আছে সেটি জেনে খোজঁ নিন, পর্যাপ্ত টাকা আছে কিনা অথবা সেই ডেভেলপারের রিয়েল এষ্টেট ব্যবসা ছাড়াও আরো অন্য কোন ব্যবসা আছে কিনা।

আপনার টাকা দিয়েই কি আপনাকে বুঝানো হচ্ছে? সেই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও প্রয়োজনে যান। কারন, অধিকাংশ ডেভেলপার বিভিন্ন ক্লাইন্ট এর কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে এপার্টমেন্ট বিল্ডিং এর কাজ সমাপ্ত করতে চায়। আর, এক্ষেত্রে কোন কারনে ফ্ল্যাট বিক্রি করতে না পারলে, নির্মাণ কাজ মাঝপথে এসে থেমে যায়। এতে বিপদে পরতে হয় ফ্ল্যাট ক্রেতা সহ জমির মালিককে। ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার আগে, একজন উকিল নিয়ে ডেভেলপারের অফিসে গিয়ে যে জায়গার ফ্ল্যাটটি কিনতে চান, সেই জায়গার জমির সকল কাগজপত্র চেক করান।

এডভোকেট দিয়ে যাচাই করাবেন কেন? ডেভেলপারকে বুঝতে দিবেন না যে, আপনার সাথে আসা লোকটি একজন উকিল। কারন, ঢাকা শহরের বেশির ভাগ জমির কাগজপত্রে ভেজাল থাকে আর এইসব ভেজালের কারনে পরবর্তীতে ডেভেলপারের পাশাপাশি ফ্ল্যাটক্রেতাকেও বিপদে পড়তে হয়। নিজের সারা জীবনের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনে আপনি বিপদে কেন পড়বেন। উকিল না পেলে, প্রয়োজনে, আমার সাহায্য নিতে পারেন। যে প্রজেক্টটি থেকে ফ্ল্যাট ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই প্রজেক্টটি রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) কর্তৃক প্ল্যান পাস হয়েছে কিনা, তা যাচাই করবেন। বর্তমানে রাজউক নিয়ম করেছে, প্রজেক্টস্থলের সাইনবোর্ডে অবশ্যই রাজউকের স্মারক নাম্বার থাকতে হবে এবং ব্রশিয়্যারেও রাজউকের স্মারক নাম্বার থাকতে হবে। এছাড়াও নির্মাণ কাজ শুরুর আগে প্রজেক্টস্থলে একটি সাইনবোর্ড থাকতে হবে ৫ফিট বাই ৩ফিট। সেখানে “ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত তথ্যাদি” লেখা থাকবে যেমন: কাজ আরম্ভের তারিখ, শেষ করার তারিখ ইত্যাদি । সেই সাইনবোর্ডটিও সাইটে টানানো আছে কিনা দেখুন। যদি না থাকে, তাহলে আপনার ঐ প্রজেক্ট থেকে ফ্ল্যাট না কেনাই ভাল।

ফ্ল্যাট কেনার আগে অবশ্যই লেখাটি পড়ে নিন/সর্বস্ব বিক্রি করে ফ্ল্যাট কিনতে যাবেন না

যদি রাজউক থেকে প্ল্যান পাসের স্মারক নাম্বারটি সাইনবোর্ডে পান, তাহলে অনলাইনেও যাচাই করতে পারেন, সেটি সঠিক কি না বা কত তলার প্ল্যান রাজউক থেকে দিয়েছে।

ফ্ল্যাট কেনার আগে ক্রেতাকে যা বুঝতে হবে

Caption: Flat Purchase Nitimala

ফ্ল্যাট কেনার নিয়ম ২০২৪ । যেভাবে আপনি ফ্ল্যাট কেনার পূর্বে যাচাই বাছাই কার্য সম্পন্ন করবেন

  1. ফ্ল্যাট কেনার আগে জেনে নিন, প্রজেক্টটি “জমির মালিক ও ডেভেলপার” মিলে ” যৌথ মালিকানায়” বা জয়েন্ট ভেঞ্চারে হচ্ছে কিনা। যদি জয়েন্ট ভেঞ্চারে হয়, তাহলে ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সুবিধাই বেশি। কারন, একজন ফ্ল্যাট ক্রেতা একটি বা দুটি ফ্ল্যাট কিনে সাধারনতঃ। কিন্তু জমির মালিক বর্তমানের প্রচলিত রেশিও তে প্রজেক্টের প্রায় অর্ধেক ফ্ল্যাটের মালিক হয়।
  2. সেক্ষেত্রে এপার্টমেন্টটি নির্মানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জমির মালিকের পূর্ণ তদারকি থাকে। তাই যৌথ মালিকানায় নির্মিত এপার্টমেন্ট প্রজেক্ট থেকে ফ্ল্যাট ক্রয় করাই অধিকতর ভাল।
  3. যৌথ মালিকানায় নির্মিত প্রজেক্ট থেকে ফ্ল্যাট কেনার আগে প্রজেক্টস্থলে যেয়ে কিংবা টেকনিক খাটিয়ে ডেভেলপারের কাছ থেকে জমির মালিকের ঠিকানা নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। উনার সাথে আলাপ করেও জমির ব্যাপারে কিংবা ডেভেলপারের ব্যপারে অনেক তথ্য জানতে পারবেন।
  4. সর্বোপরি, জমির মালিক বা মালিকগন কেমন তাও বুঝতে পারবেন। সারা জীবন একসাথে থাকতে হবে- তাই জমির মালিক বা মালিকগন কোন ক্যাটাগরির তা জানা ভাল।
  5. যদি আপনি পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন যে, অমুক প্রজেক্ট থেকেই ফ্ল্যাট ক্রয় করবেন, তাহলে টোকেন মানি বা বুকিং মানি দেয়ার আগে আপনি চেষ্টা করুন, ঐ জায়গাটির জমি সংক্রান্ত কাগজপত্রের একসেট ফটোকপি নিতে। সাধারনতঃ ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার আগে কোন ডেভেলপারই কোন ক্লাইন্টকে তা দিতে রাজি হবে না, সেক্ষেত্রে ঐ কোম্পানীর কোন সেলস্ এক্সিকিউটিভকে বা লিগ্যাল এক্সিকিউটিভকে ম্যানেজ করে, ফটোকপির টাকা দিয়ে হলেও তা ম্যানেজ করতে চেষ্টা করুন। তাও না পারলে, জমির মালিককে পটিয়ে একসেট ফটোকপি জোগাড় করুন।
  6. উকিলকে দেখানো সত্তেও আপনি নিজে ঐ কাগজ থেকে পর্চাগুলো ( সি.এস, এস.এ, আর.এস, বিএস/সিটি জরীপ পর্চা) নিয়ে ঐ প্রজেক্টটি যে ভূমি অফিসের তত্ত্বাবধানে, সেই ভূমি অফিসে চলে যান। ভূমি অফিসের যে কোন কর্মচারীকে দুই চারশত টাকা দিলেই সে রেকর্ড পত্র দেখে আপনাকে জানিয়ে দিতে পারবে, জায়গায় কোন ঝামেলা আছে কি না। কাজগুলো একটু ঝামেলার মনে হলে, নিজেই ভাবুন, আপনার সারা জীবনের সঞ্চিত টাকা বা লোনের টাকায় ফ্ল্যাটটি কিনছেন। দেখবেন, তখন আর ঝামেলা মনে হবে না।

রিহ্যাব সদস্যের ফ্ল্যাট কেন কিনবেন?

উকিলকে দেখানোর পরেও এ কাজটি নিজেকে করতে বললাম এ কারনে যে, উকিল সাহেবকে টাকার বিনিময়ে কাজ করাবেন। তিনি অধিক সময় দিয়ে আপনার কাগজগুলো যাচাই নাও করতে পারেন। আবার ডেভেলপার কাগজে কোন ঝামেলা থাকলে, ফটোকপিতে বা অফিসে রক্ষিত কাগজে তা ঠিকঠাক করে রাখতে পারেন যা একমাত্র ভূমি অফিসে এলেই আপনি জানতে পারবেন। যদিও REHAB ( Real Estate & Housing Association of Bangladesh) বলে থাকে, রিহ্যাবের সদস্যভূক্ত কোম্পানী থেকে ফ্ল্যাট কিনতে এবং এতে অনেক সুবিধে হবে। একটি কথা ভেবে দেখুন, রিহ্যাব কাদের সংগঠন? রিয়েল এষ্টেট কোম্পানীগুলোরই সংগঠন। একটি রিয়েল এষ্টেট কোম্পানীকে রিহ্যাবের সদস্য হতে হলে এককালীন =৩,২৫,০০০/- টাকা দিতে হয় এবং বছরে সদস্য ফি হিসেবে =২৫,০০০/- টাকা করে সংগঠনকে দিতে হয়। এবার ভাবুন, রিহ্যাব আপনার কতটুকু স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজ করবে।

Credit to Raihan Uddin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *