আয়কর

ই-রিটার্ন বিষয়ক জিজ্ঞাসা ২০২৪ । অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের পূর্বে যা অবশ্যই জেনে নিবেন

গত বছর ৫ লাখেরও বেশি মানুষ অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন-রিটার্ন দাখিলের সহজ ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন–ই-রিটার্ন বিষয়ক জিজ্ঞাসা ২০২৪

তথ্য দিলেই অটো হিসাব হবে? হ্যাঁ। ই-রিটার্ন সিস্টেম টি হল একটি নতুন উপায়। ট্যাক্স সফ্টওয়্যার প্রোগ্রামগুলি সেসব করদাতাদের জন্য যারা তাদের নিজস্ব ট্যাক্স নিজেই প্রদান করিতে চান তবে তাদের প্রয়োজন নির্দেশিকার । অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ই-রিটার্ন সিস্টেম তৈরি করেছে এবং তারা নির্দেশনার জন্য একটি ব্যবহারকারী ম্যানুয়াল তৈরি করেছে, আপনি সিস্টেম থেকে ব্যবহারকারী ম্যানুয়াল ডাউনলোড করিতে পারেন। সিস্টেমটি ব্যবহার করা খুব সহজ এবং ট্যাক্স হিসাব সম্পর্কে জানার প্রয়োজন নেই, সফ্টওয়্যারটি আপনাকে পুরো প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে গাইড করবে এবং আপনার ট্যাক্স গণনা করবে।

etaxnbr.gov.bd এ প্রবেশের পর কি করতে হবে? নিবন্ধন করিতে এই https://etaxnbr.gov.bd/ এ প্রবেশ করুন। রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করুন এবং তারপর সিস্টেম আপনাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য গাইড করবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য আপনার টি আইএন এবং মোবাইল নম্বর প্রয়োজন। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর স্ক্রিনে সাইন ইন বাটনে ক্লিক করুন এবং সামনে এগিয়ে যান । সাইন ইন প্রক্রিয়ায় আপনি আপনার পাসওয়ার্ড সেট করবেন এবং এই পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনি eReturn সিস্টেমে লগ ইন করবেন। ই-রিটার্ন সিস্টেমে সাইন-ইন করিতে হলে টি আইএন এবং পাসওয়ার্ড লাগবে। পাসওয়ার্ড পাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করিতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনি নিজের পাসওয়ার্ড নিজে ঠিক করে নিবেন। এরপর যে কোনো সময় আপনার টি আইএন এবং এই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ই-রিটার্ন সিস্টেমে লগ-ইন করিতে পারবেন।

ই রিটার্ন ব্যবহারকারকে কি প্রোগ্রামার হতে হবে? না। ট্যাক্স সফ্টওয়্যার প্রোগ্রাম থেকে সবাই উপকৃত হতে পারে । আপনি যদি পেশাদার ট্যাক্স প্রস্তুতকারীদের চার্জ দিতে না চান, তবে ই-রিটার্ন সফ্টওয়্যার টি হবে আপনার সহায়ক। আজকাল অনেক করদাতা একটি পেশাদার কর প্রস্তুতকারী ব্যবহার না করে কর সফ্টওয়্যার (eReturn) ব্যবহার করছে ।

টিআইএন এবং মোবাইল নম্বর থাকা আবশ্যক/ নিজ নামে মোবাইল রেজিস্ট্রশন থাকতে হবে

ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করিতে টি আইএন এবং আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত (biometrically verified) মোবাইল ফোন নম্বর লাগে। আপনার মোবাইল ফোন নম্বরটি biometrically verified কি না তা আপনার ফোন থেকে *১৬০০১# নম্বরে ডায়াল করে জেনে নিতে পারেন।অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করার পর আবার সার্কেলে গিয়ে কাগজপত্র দাখিল করিতে হবে না।অনলাইনে রিটার্ন submit করার সাথে সাথেই আপনার অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন হয়ে যাবে।

Caption: etaxnbr.gov.bd

ই রিটার্ন দাখিল করার নিয়ম ২০২৪ । অনলাইনের মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিতে চাই, কিভাবে শুরু করব?

  1. ই-রিটার্ন সফ্টওয়্যার টি ব্যবহারের জন্য আপনার মোবাইল ফোন নম্বর (বায়োমেট্রিকলি ভেরিফাইড) এবং ইটি আইএন নম্বর প্রয়োজন হবে । যদি টি আইএন না থাকে তাহলে, এই সফটওয়্যার এ ই-টিন অপশন আছে সেখান থেকে ই-টিন নাম্বার টি সংগ্রহ করিতে হবে ।
  2. ই-রিটার্নকে সহজ ও user-friendly করার জন্য অনেক features দেয়া আছে, যার অনেকগুলো মোবাইল ডিভাইসে পাওয়া যাবে না। তাই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে ই-রিটার্ন করুন।
  3. ই-রিটার্ন ব্যবহার করার সময় প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র (বেতন সনদপত্র, বিনিয়োগ (সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, জীবন বিমা ইত্যাদি), ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ফ্ল্যাট, জমির তথ্য ইত্যাদি)) সঙ্গে রাখতে হবে। আপনার ডকুমেন্টস থেকে নিজস্ব অনেক তথ্য ই-রিটার্ন সফ্টওয়্যারে ইনপুট দিতে হবে।
  4. আপনাকে কোনো অতিরিক্ত ডকুমেন্টস সংযুক্ত করিতে হবে না । প্রয়োজন ইনপুট গুলো প্রদান করবেন এবং ভবিষ্যতের রেফারেন্সের জন্য আপনার সাথে সম্পর্কিত ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে রাখুন।
  5. ই-রিটার্ন এ সকল হিসাব আপনার ইনপুটগুলির উপর ভিত্তি করে হবে । যদি আপনার নিজস্ব হিসাব ভিন্ন হয় তবে আপনার কাছে বিকল্প আছে যে আপনি আপনার প্রদান কৃত হিসাব সিস্টেমে এডিট করিতে পারবেন।
  6. আপনার যদি কোনো উৎস ট্যাক্স বা অগ্রিম ট্যাক্স পেমেন্ট থাকে, এই মুহূর্তে অনলাইন ফাইলিং এ পেমেন্ট নাও হতে পারে (যাচাই প্রক্রিয়ার উন্নয়ন কাজ চলমান। আপনি ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আপনার রিটার্ন কাগজ প্রস্তুত করিতে পারবেন, সেক্ষেত্রে প্রস্তুত কৃত ট্যাক্স অফিসে জমা হবে ।
  7. রিটার্ন প্রস্তুত করার সময়, আপনি (?) চিহ্নে মাউস রেখে সিস্টেম সহায়তা পেতে পারেন, এবং ব্যবহারকারীর ম্যানুয়াল থেকে বিস্তারিত নির্দেশিকা এবং অবশেষে কল সেন্টারে সরাসরি কল করে সহায়তা নিতে পারবেন।
  8. আপনি যদি আপনার টি আইএন, নিজের মোবাইল নম্বর, সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ প্রস্তুত থাকেন, ই-রিটার্ন ব্যবহারকারী ম্যানুয়াল (ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে ব্যবহারকারী ম্যানুয়াল) ডাউনলোড করুন, তারপর http://etaxnbr.gov.bd/ এ লগ ইন করুন। তারপরও বুঝতে যদি কোনো অসুবিধা হয় তাহলে, NBR-এর কল সেন্টারে কল করুন এবং আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যান।
  9. খুবই গুরুত্বপূর্ণ: আপনি যদি আপনার নিজের ব্যতীত অন্য কারো মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্টার করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি আপনার টি আইএন দিয়ে নিবন্ধন করিতে পারবেন না এবং আপনার টি আইএন ব্লক করে দেয়া হবে।

পুরাতন ফোন নম্বরটি কি ব্যবহার করতে হবে?

না । আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত (biometrically verified) যে কোনো ফোন নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। পাসওয়ার্ড কমপক্ষে আট character বিশিষ্ট হবে। এর মধ্যে কমপক্ষে একটি করে lower case, upper case, digit (0-9) এবং special character (@, #, %, &, ইত্যাদি) থাকতে হবে। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করিলে সিস্টেম আপনাকে গাইড করবে। 

Assessment – প্রথমে আপনাকে কিছু মৌলিক তথ্য দিতে হবে: a. Assessment information – Assessment Year, Income Year ইত্যাদি। b. Heads of income- বেতন, Interest on Securities, বাড়ি সম্পত্তি থেকে আয়, কৃষি আয়, ব্যবসা বা পেশা থেকে আয়, মূলধন লাভ – এই ছয়টি (৬) হল আয়ের প্রধান উৎস। c. Additional Information- আয়ের প্রধান উৎসের অবস্থান এবং অন্যান্য আয়।
d. IT10B Requirements- সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য যেমন Gross Wealth, মোটর গাড়ি ইত্যাদি । Income – Assessment year এ আয়ের সমস্ত তথ্য দিন, যেমন বেতন, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, এফডিআর ইত্যাদি । Rebate – আপনার বিনিয়োগ থেকে রেয়াত পান। যেমন জীবন বিমা, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি। Expenditure- আপনার ট্যাক্স সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য রাখুন । উদাহরণ হল খাদ্য, পোশাকের খরচ এবং অন্যান্য খরচ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বাসস্থান খরচ, শিশুদের শিক্ষা খরচ, উৎসে কর প্রদান ইত্যাদি।
Assets & Liabilities-সম্পদ এবং দায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। যেমন: ব্যবসার মূলধন, অ-কৃষি সম্পত্তি, কৃষি সম্পত্তি, আর্থিক সম্পদ (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, সেভিংস সার্টিফিকেট, এফডিআর, ডিপিএস), মোটর গাড়ি, সোনা, হীরা, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র, নগদ ইত্যাদি সম্পদের উদাহরণ। এছাড়া ব্যবসা সংক্রান্ত ঋণ দায়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। Tax and Payment- এই সেকশনে সিস্টেম আপনাকে আপনার মোট আয়ের বিবরণ, ট্যাক্স কম্পিউটেশনের বিবরণ, ট্যাক্স প্রদেয় পরিমাণ দেখাবে । এই সেকশন থেকে আপনি অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন এবং আপনি অফলাইন রিটার্ন ডাউনলোড বা প্রিন্ট করিতে পারবেন। Return View- এখানে সফ্টওয়্যারে সম্পূর্ণ রিটার্ন দেখাবে, আপনি ভুল কোন তথ্য এন্ট্রি দিয়েছেন কিনা তা পরীক্ষা করিতে পারবেন ।

কাগজ পত্র কোথায়, কীভাবে attach করিতে হবে? অনলাইন রিটার্ন দাখিলে কোনো কিছু attach করিতে হবে না। আপনি দরকারি কাগজপত্র সাথে নিয়ে বসুন এবং প্রয়োজনীয় ফিল্ডগুলোতে নির্ভুলভাবে এন্ট্রি দিন। অনলাইনে রিটার্ন submit করার সাথে সাথে সিস্টেমে আপনার অ্যাসেসমেন্ট হয়ে যাবে এবং আপনি acknowledgment slip পেয়ে যাবেন। Tax certificate (ট্যাক্স সার্টিফিকেটও) সাথে সাথে তৈরি হয়ে যাবে। বামপাশের Tax Records মেনুতে ক্লিক করে আপনি যে কোনো সময় acknowledgment slip, Tax certificate ও রিটার্নের কপি প্রিন্ট করিতে পারবেন। ই-রিটার্নকে সহজ ও user-friendly করার জন্য অনেক features দেয়া আছে, যার অনেকগুলো মোবাইল ডিভাইসে পাওয়া যাবে না। তাই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে ই-রিটার্ন করুন।

পরিশোধিত কর কি সমন্বয় করা যায়? ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আপনার পেপার রিটার্ন তৈরি করে নিতে পারবেন। আপনার দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে ই-রিটার্ন সিস্টেম নির্ভুলভাবে আপনার রিটার্ন বানিয়ে দিবে, যা প্রিন্ট করে আপনি সার্কেলে জমা দিতে পারবেন। উৎস বা অগ্রীম করের অনলাইন ভেরিফিকেশনের জন্য অন্যান্য সিস্টেমের সাথে কানেক্টিভিটি (API) লাগে। API স্থাপনের কাজ চলমান আছে, যা শেষ হলে উৎস বা অগ্রীম কর প্রদানকারী করদাতাগণ অনলাইনে রিটার্ন submit করিতে পারবেন।

অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করার সময় কোনো ট্যাক্স দিতে হলে আমি কি অনলাইন পেমেন্ট করিতে পারবো? হ্যাঁ, পারবেন। অনলাইন রিটার্ন সাবমিট করার সময় কোনো ট্যাক্স দিতে হলে ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকেই অনলাইন পেমেন্ট করা যাবে। ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে কীভাবে অর্থপ্রদান করবেন, তা ব্যবহারকারী ম্যানুয়ালের অধ্যায় ৬, (কর এবং অর্থপ্রদান) দেখুন। আপনি পিডিএফ ফরম্যাটে ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে টিন সার্টিফিকেট পাবেন। ট্যাক্স সার্টিফিকেট আপনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি, ই-রিটার্ন সিস্টেম আপনাকে পিডিএফ ফরম্যাটে ট্যাক্স সনদপত্র প্রদান করবে । রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমান হিসেবে, আপনি ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে Acknowledge slip ডাউনলোড করে পারবেন। আপনি রিটার্ন জমা দিয়েছেন কিনা ই-রিটার্ন সিস্টেমে তার প্রমান স্বরূপ সফ্টওয়্যার একটি লিঙ্ক তৈরি করবে, সেই লিঙ্কে ক্লিক করে যে কেউ রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখতে পারেন । যার নাম ভেরিফিকেশন স্লিপ। আপনি ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে রিটার্ন ডকুমেন্ট পাবেন,সেটা আপনি ডাউনলোড করিতে পারবেন অথবা ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে প্রিন্ট করিতে পারবেন। ই-রিটার্ন সিস্টেম দ্বারা চালান কপি তৈরি হবে। ট্যাক্স সংক্রান্ত সব ধরনের ইতিহাস আপনি ই-রিটার্ন সিস্টেমে পেয়ে যাবেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *