এইমাত্র পাওয়া

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো: ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান অভিযান

দেশের স্বাস্থ্যখাতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে, আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান অভিযান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর অধীনে পরিচালিত এই মাসব্যাপী বিশেষ কর্মসূচিতে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা (ইনজেকটেবল) প্রদান করা হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) নামে পরিচিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদিত এই টিকাটি শিশুদের টাইফয়েড জ্বর থেকে সুরক্ষিত রাখবে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের এক তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যুর হার উদ্বেগজনক।

কারা, কখন এবং কোথায় টিকা পাবে?

  • বয়সসীমা: ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে: প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমানের সকল শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা পাবে।
  • অন্যান্য শিশু: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু ক্যাম্পেইন চলাকালীন যেকোনো ইপিআই কেন্দ্রে বিনামূল্যে টিকা নিতে পারবে।

নিবন্ধন প্রক্রিয়া: অভিভাবকদের টিকা গ্রহণের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিশুর ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন শেষে জন্মনিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে। তবে, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, পূর্ব-নিবন্ধন ছাড়াও যোগ্য শিশুরা ইপিআই কেন্দ্রে ম্যানুয়াল নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা নিতে পারবে।

অভিভাবকদের জন্য জরুরি তথ্য: স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা টাইফয়েড টিকা সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে অভিভাবকদের আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন:

  1. টাইফয়েডে আক্রান্ত অবস্থায় টিকা: টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত থাকাকালীন টিকা নেওয়া যাবে না। সুস্থ হওয়ার পরই টিকা নিতে হবে।
  2. আগে টিকা নিলেও কি নিতে হবে? হ্যাঁ, ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকলকেই এই ক্যাম্পেইনের আওতায় এক ডোজ টিকা নিতে হবে, এটি রোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  3. স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে: স্কুলের নির্ধারিত দিনে অনুপস্থিত থাকলে ক্যাম্পেইন চলাকালীন যেকোনো ইপিআই কেন্দ্র থেকে টিকা নেওয়া যাবে।
  4. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: টিকাটির কোনো বড় ধরনের ঝুঁকি নেই। কেবল সামান্য ব্যথা বা হালকা জ্বর হতে পারে, যা দ্রুতই সেরে যায়।

সরকার আশা করছে, এই বৃহৎ পরিসরের টিকাদান কর্মসূচি দেশে টাইফয়েড সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে এবং বহু মূল্যবান জীবন রক্ষা করবে। এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কর্মসূচি সফল করতে স্বাস্থ্য বিভাগ সকল অভিভাবক, শিক্ষক, এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *