এইমাত্র পাওয়া

সোমবার থেকে টাকা পাচ্ছেন ৫ ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা: একীভূত হয়ে যাত্রা শুরু করছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’

টাকা তুলতে না পেরে দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকা পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য সুখবর আসছে। আগামী সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নবগঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আমানত বিমা তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে গ্রাহকদের এই অর্থ প্রদান করা হবে।

একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এই পাঁচটি ব্যাংককে অধিগ্রহণ করে গঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি-কে ইতিমধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

টাকা উত্তোলনের নিয়ম ও সীমা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রাহকরা ধাপে ধাপে তাদের আমানত ফেরত পাবেন:

  • প্রাথমিক সীমা: একজন গ্রাহক তার হিসাব থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত তাৎক্ষণিক উত্তোলন করতে পারবেন।

  • পরবর্তী ধাপ: যাদের জমা ২ লাখ টাকার বেশি, তারা প্রথম কিস্তির পর প্রতি তিন মাস অন্তর ১ লাখ টাকা করে তুলতে পারবেন। এভাবে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ থাকবে।

  • একাধিক হিসাব: যদি কোনো গ্রাহকের পাঁচটি ব্যাংকেই আলাদা হিসাব থাকে, তবে তিনি প্রতিটি ব্যাংক থেকেই নির্ধারিত সীমার টাকা তুলতে পারবেন। তবে একই ব্যাংকে একাধিক হিসাব থাকলে কেবল একটি হিসাব থেকে টাকা তোলা যাবে।

বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত গ্রাহক

আমানতকারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে কিছু ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিক এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে উত্তোলনের কোনো সীমা থাকবে না। তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।

নতুন ব্যাংকের কাঠামো ও মূলধন

রাজধানীর সেনাকল্যাণ ভবনে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে বড় ধরনের মূলধন জোগান দেওয়া হচ্ছে:

  • অনুমোদিত মূলধন: ৪০,০০০ কোটি টাকা।

  • পরিশোধিত মূলধন: ৩৫,০০০ কোটি টাকা (সরকার দিচ্ছে ২০,০০০ কোটি এবং আমানত বিমা তহবিল থেকে ১৫,০০০ কোটি টাকা)।

ব্যাংকিং খাতের বর্তমান চিত্র

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এই পাঁচটি ব্যাংকে বর্তমানে প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারীর ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা জমা রয়েছে। বিপরীতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা, যার বড় অংশই এখন খেলাপি। ব্যাংকগুলোর প্রকৃত সম্পদের মূল্য ঋণাত্মক হওয়ায় ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ’ অনুযায়ী আগের শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার শূন্য করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে এবং ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা আনতেই এই একীভূতকরণ ও অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *