ব্যাংক লুটপাটের দায়ে ‘সমষ্টিগত শাস্তি’র হুঁশিয়ারি গভর্নরের
ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যাংকে অনিয়ম বা লুটপাট হলে তার দায় শুধু শীর্ষ পর্যায়ের নয়, বরং ওই ব্যাংকের সকল কর্মকর্তাকেই নিতে হবে। বিশেষ করে কোনো কর্মকর্তা যদি অনিয়ম দেখেও তা কর্তৃপক্ষ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে না জানান, তবে তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্ম: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মূল বক্তব্যের উল্লেখযোগ্য দিকসমূহ:
-
সমষ্টিগত শাস্তি (Collective Punishment): গভর্নর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ব্যাংকের ক্ষতি হয় এমন কাজে জড়িত না থাকলেও, যারা নীরব দর্শক হয়ে থাকবেন তারা কোনো প্রকার বোনাস বা আর্থিক প্রণোদনা পাবেন না।
-
দায়বদ্ধতা: নিচের লেভেলের কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে ব্যাংকের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড নজরে আনা। যদি কোনো অনিয়ম হয়, তবে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনসমক্ষে আনার আহ্বান জানান তিনি।
-
শাস্তির বিধান: গভর্নর বলেন, “ওপরের লেভেলে খারাপ হতেই পারে, কিন্তু নিচের লেভেলেও দায় আছে। যদি কেউ জেনেও চুপ থাকে, তবে তাকেও শাস্তির ভাগ নিতে হবে।”
ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) এমডি ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। বক্তারা ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে কাঠামোগত সংস্কারের ওপর জোর দেন।
গভর্নরের এই বক্তব্যে ব্যাংকিং খাতে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—ভবিষ্যতে অনিয়ম রুখতে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভ্যন্তরীণ নজরদারি বৃদ্ধি এবং প্রতিটি কর্মীর পেশাগত নৈতিকতা নিশ্চিত করাই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য।


