জমি খারিজ করার পদ্ধতি ২০২৪ । জমি খারিজ না করলে কি হয়?

জমির দলিল বা পর্চা মালিকানার অন্যতম ডকুমেন্ট কিন্তু নামজারি বা খারিজের মাধ্যমে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করা হয় – জমি খারিজ বা নামজারি করার নিয়ম ২০২৪

নামজারি কি? –কোনো কারণে জমি হস্তান্তর হলে খতিয়ানে পুরোনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোকে বলে মিউটেশন বা নামজারি। উত্তরাধিকারসূত্রে, বিক্রয়, দান, খাসজমি বন্দোবস্তসহ বিভিন্ন ধরনের হস্তান্তরের কারণে জমির মালিকানা বদল হয়।

নামজারি খতিয়ানে কি গ্রামের নাম থাকে? না। গ্রামের নাম থাকে না মৌজার নাম থাকে। অনুগ্রহ করে আপনার মৌজার নাম/ নম্বর দিয়ে খতিয়ান নং অনুসন্ধান করুন। আপনার মৌজার নাম না জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে আপনার মৌজা নাম/ নম্বর জেনে নিবেন। নামজারির মাধ্যমেই মূলত নতুন মালিকের তথ্য রেজিস্টার বা বালামে সন্নিবেশিত হয়ে থাকে এবং ডাটা অন্তর্ভূক্ত হয়।

নামজারি নিয়ম কি? প্রথমে https://mutation.land.gov.bd ক্লিক করে পেইজ ওপেন করুন। অনলাইনে আবেদন করুন ট্যাবে (নামজারি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন) এখানে ক্লিক করুন। আপনাকে নামজারি আবেদন করার ফরমে নিয়ে যাওয়া হবে। জমি খারিজ বা অনলাইনে নামজারির আবেদন করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আপনার জনা জরুরী। যেমন আপনি যদি কারো প্রতিনিধি হিসাবে আবেদন করেন তাহলে আবেদন কারীর তথ্য ঘরের নিচে একটি ঘর রয়েছে। আবেদনকারী নিজে না হয়ে প্রতিনিধি হলে এখানে ক্লিক করুন ঘরে টিক মার্ক দিন। আপনার আবেদনটি জরুরী হয়ে থাকলে জরুরী কিন? টিক মার্ক দিন। নথিপত্র আপলোড করার ক্ষেত্রে, এক এক করে আপলোড করতে হবে। নথিটি আপলোড হলে এটি কি ধরণের নথি (দলিল/খতিয়ান/ নাগরিক সনদ) ড্রপডাউন মেনু থেকে সিলেক্ট করে দিতে হবে। প্রথমে যখন আপনি ই নামজারি আবেদন করবেন প্রথমেই কোর্ট ফি বাবদ ২০ টাকা এবং নোটিশ জারি ফি বাবদ ৫০ টাকা মোট ৭০ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। কিছু হয়ে গেলে নিচের “দাখিল” বাটনটি ক্লিক করুন। তাহলে আপনার আবেনদটি সাবমিট হবে এবং আপনার মোবাইলে একটা মেসেজ যাবে। আবেদনটি সাবমিট হলে আপনি একটি আইডি নাম্বার পাবেন। এই আইডি নাম্বার দিয়ে আবেদনের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আবেদন অনুমোদন হলে রেকর্ড সংশোধন বা হালনাগাদ ফি বাবদ ১০০০/- ( এক হাজার টাকা) এবং প্রতি খতিয়ান সরবরাহ ফি বাবদ ১০০/- (একশত) টাকা অনলাইনে জমা দিতে হবে। ফি পরিশোধ হয়ে গেলে অনলাইন থেকে কিউআর কোডযুক্ত (কুইক রেসপন্স কোড)) অনলাইন ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিট) সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনার আবেদন কি অবস্থায় রয়েছে বা কতদূর অগ্রগতি তা অনলাইনে জানতে পারবেন। আবেদনটি বাতিল হয়ে গেলেও কি কি কারণে বাতিল করা হয়েছে তা আপনাকে জানানো হবে।বর্তমানে আপনার নামজারি আবেদনটি কি অবস্থায় আছে তা জানার জন্য ই নামজারি ওয়েবসাইটের হোম পেজে যান। ই নামজারি বা জমি খারিজ আবেদন ট্রাকিং ফরম আপনার বিভাগ, আবেদন আইডি ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নাম্বার এবং নিচের ঘরে পাশের শর্তমত যোগফল বা বিয়োগফল লিখুন। এখন সার্চ করলে আপনার আবেদনটির সর্বশেষ অবস্থা জানা যাবে। আপনার নামজারি আবেদন অনুমোদন হলে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। শুনানির দিন ধার্য হলে আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ যাবে, কত তারিখ শুনানি হবে ও সময় জানিয়ে দেবে। বর্তমানে যে কোন ভুমি মামলার শুনানিতে অনলাইনেও অংশগ্রহণ করা যায়। শুনানিতে আপনি আপনার জরুরী কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকবেন। শুনানি শেষে আপনার নাম জারি বা মিউটেশন এর কাজ শেষ। আপনাকে মোবাইলের মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে আপনাকে।

এখন কি ম্যানুয়ালি নামজারি করা যায়? না। এখন অনলাইনে নামজারির আবেদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে

একবার নামজারি আবেদন করলে তা আর পরিবর্তনের সুযোগ নেই। অনুগ্রহ করে পুনারয় নামজারির আবেদন করুন।

https://mutation.land.gov.bd/

Caption: Kharij Fee

খারিজ ডকুমেন্ট ২০২৪ । নামজারির জন্য যে যে কাগজপত্র প্রয়োজন

  1. ২০(বিশ )টাকার কোর্ট ফি সহ মূল আবেদন ফর্ম (বর্তমানে অনলাইনে আবেদন করতে হয়)।
  2. আবেদনকারীর ১(এক )কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (একাধিক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য ছবি প্রযোজ্য )।
  3. আবেদনকারীর পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি (জাতীয় পরিচয়পত্র /ভোটার আইডি /জন্ম নিবন্ধন সনদ /পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স /অন্যান্য )
  4. পর্চা বা খতিয়ানের ফটোকপি /সার্টিফাইড কপি।
  5. বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ।
  6. সর্বশেষ জরিপের পর থেকে বায়া দলিলের সার্টিফাইড কপি বা ফটোকপি।
  7. উত্তরাধিকারসূত্রে মালিকানা লাভ করলে অনাধিক তিন মাসের মধ্যে ইস্যুকৃত মূল উত্তরাধিকার সনদ।
  8. ডিক্রির মাধমে জমির মালিকানা লাভ করলে উক্ত ডিক্রির সার্টিফাইড কপি বা ফটোকপি।

নামজারি করতে কত সময় লাগে?

নামজারির আবেদন করলে সাথে সাথে হয় না। পূর্বের মালিক-কে নোটিশ প্রদান করা হয় এবং জবাবের জন্য সময় দেয়া হয়। ক) সাধারণ ক্ষেত্রে ২৮ (আটাশ) কার্য দিবস । খ) সনদ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণের জন্য ১০(দশ) কার্য দিবস । গ) প্রবাসীদের জন্য ( মহানগর এলাকায়) ১২ (বার) কার্য দিবস । ঘ) প্রবাসীদের জন্য ( অন্যান্য এলাকায়) ০৯ (নয়) কার্য দিবস । ঙ) গুরুত্বপূর্ণ/রপ্তানীমুখী/বৈদেশিক বিনিয়োগপুষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ০৭ (সাত) কার্য দিবস । জমির মালিকানার ধরণ ভেদে সর্বনিম্ন ৭ দিন হতে ২৮ কর্মদিবস প্রয়োজন পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *