হিটলার কেন ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন?

বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হলেন হিটলার।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার তার গ্যাস চেম্বারে  কয়েক লক্ষ ইহুদীদের বিভিন্ন কায়দায় হত্যা করেছিল।ইহুদিদের এইভাবে হত্যা করার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষের তালিকায় আজ হিটলারের নাম।

  হিটলারের ইহুদি নিধন মিশন 

 দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার যে ইহুদি নিধানের মিশনে নেমেছিলেন,তার মূল দায়িত্বে ছিলেন আইস ম্যান বলা হয়।আইস ম্যান হিটলারের নির্দেশে পাঁচ লক্ষ নয় প্রায় ৫০ লক্ষ ইহুদিদের মৃত্যুর জন্য দায়ী  ছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে তিনি ইহুদিদের ট্রেনে মোটরে করে হিটলারের কনসেনট্রেশন চেম্বারে নিয়ে গিয়ে তাদের দিয়ে একটি ক্যাম্প খোদানো হতো। তারপর পিছন থেকে গুলি করে। হিটলারের একদল সেনাবাহিনীর সদস্য গুলির ধাক্কায় সামনের এই নালাতে পড়ে যেত ইহুদিরা। আর যারা গুলি খেয়েও নালাতে পড়তো না তাদেরকে লাথি মেরে নালাতে ফেলে দেওয়া হতো।যারা এসব নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে চিৎকার করে,কষ্টে কান্না করে তাদের মুখের ভিতরে মাটি চাপা দিয়ে উপর দিয়ে স্টিম রোলার দিয়ে মাটির সমান করে দেওয়া হতো।গুলি করে মারার ধীর গতির জন্য গ্যাস চেম্বার তৈরি করে গ্যাস দিয়ে ইহুদিদের মারা হতো।একসাথে অনেকজন ইহুদীকে যাতে কম সময়ে মারা যায়, এজন্য একটি ঘর তৈরি করা হলো যার নাম দেওয়া হল কনসেন্ট্রেশন চেম্বার।এটি ছিল মূলত হিটলারের নির্যাতন খানা।যেখানে তিনি ইহুদিদের বিভিন্ন কায়দায় হত্যা করতেন। 

হিটলারের কনসেন্ট্রেশন চেম্বার

ইহুদিদের বিভিন্ন কায়দায় হত্যা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।এই কনসেনট্রেশন সেন্টার ছিল নিকটতম গ্রাম থেকে কয়েক মাইল দূরে নির্জন জায়গায় বুঝতেই পারছেন কাছে পিঠে লোক চলাচলের কোন জায়গা ছিল না।এই চেম্বারটি বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যেত না,এটির ভিতর কি পৈশাচিক কাজকর্ম চলতো । ইহুদিদের অন্য দেশ থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বা অন্য দেশে চাকরি করার সুযোগ সুবিধা দেখিয়ে এদেশে আনা হতো এবং তাদের মধ্যেও যারা কর্মক্ষম তাদেরকে কাজ দিয়ে, অন্যান্যদেরকে চিহ্নিত করা হতো গ্যাস চেম্বার এর শিকার হিসেবে।

এসব ইহুদিরা প্রথমে বুঝতে পারে না যে এখানে কি  চলবে? তারা কর্মের আশায় এখানে আসলো এবং মুমূর্ষ ভাবে মৃত্যুবরণ করেন। নিজেদের দেশ থেকে এখানে কাজ করতে আসতো তখন তারা বুঝতে পারতো যে নিজেদের দেশে আর ফিরে যাওয়া হয়তো বা হবে না। তাই তারা তাদের সঙ্গে করে হিরে সোনা দানা টাকা-পয়সা সবকিছু নিয়ে আসতো।যখন তারা এই কনসেনট্রেশন চেম্বারে ভিতরে প্রবেশ করত সে সময় কয়েকজন সেনাবাহিনী তাদের হাত থেকে এসব সোনা দানা টাকা পয়সা বাইরে রেখে দিতো। এই দৃশ্যটা এমন ছিল যেমন স্নান করার আগে আমরা আমাদের মূল্যবান জিনিসপাতি একটি যথাযথ স্থানে রেখে যায় এবং স্নান করার পরে সেগুলোকে আবার ফেরত নেই।হিটলারের সেনাবাহিনীরা ইহুদীদের বলতেন, তাদের টাকা -পয়সা সোনাদানা, হিরে,জহরত সবকিছু আলাদা করে রাখা হবে তাদের কাজ শেষে তাদেরকে আবার এসব কিছু ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। যে রাস্তা দিয়ে ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে নেওয়া হতো।সে রাস্তায় নৃত্য সংগীত বাঁচতে থাকতো যাতে ইহুদিরা বুঝতে না পারে তাদের সাথে কি হতে চলেছে।

যেভাবে ইহুদিদের হত্যা করা হতো

এরপর কয়েকজন অফিসার ছুটে এসে তাদেরকে বলতেন তাড়াতাড়ি আসুন আপনাদের পরে আরো এক ব্যাচ আছে।পরে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হতো সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে গ্যাস চেম্বারে। প্রতিটি গ্যাস চেম্বারে এমন ২০০০ করে ইহুদীদের রাখা হতো।ইহুদীরা ভাবতো এসব পাইপ দিয়ে হয়তোবা পানি আসে খাওয়ার পানি বা গোসলের পানি।

তারপর তারা শাওয়ার এর কাছে দাঁড়িয়ে চাবি খুলে দেখলো জল আসেনি তাহলে এটা কিসের পাইপ? ততক্ষণে এসএস সদস্যরা পাইপ খুলে ছেড়ে দিতো বিষাক্ত গ্যাস। বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশে ইহুদিদের শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে মৃত্যুর দিকে তাদেরকে ঠেলে দিতো।ইহুদিরা যখন এক নিঃশ্বাস নিতেই ওমনি তারা আস্তে আস্তে মরতে শুরু করতো। এভাবেই বিষাক্ত গ্যাসের মাধ্যমে ইহুদিদের হত্যা করা হতো। কতইনা নৃশংস ছিল সেই দিনের হত্যার কাহিনী গুলো ভাবতে গা কাঁটা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *