বাংলাদেশের ইতিহাসে কুখ্যাত নরখাদকের কাহিনী
এই লোকের নাম খলিলুল্লাহ। তিনি সত্যি কারের নরকাদক।ইতিহাসে অনেক নরখাদকের কাহিনী রয়েছে।মানুষ কিভাবে একজন মানুষকে খেতে পারে সেটি শুধু একজন নরকাদকই জানে। পৃথিবীতে এমন অনেক নরখাদকের কাহিনী রয়েছে। এমাজন জঙ্গলে ও আফ্রিকার কঙ্গতে এক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন নরখাদকদের সন্ধান মিলেছে। এমনকি নরখাদকদের সন্ধান মিলেছে ইউরোপের অনেক জায়গায়।
ইতিহাসের ভয়ংকরতম নরখাদক খলিলুল্লাহ
১৯৭৫ সালের ৩ এপ্রিল দৈনিক বাংলার একটি বক্স নিউজ পড়ে শিউরে উঠে গোটা বাংলাদেশ। এক যুবক মরা একটি লাশের চেরা বুক থেকে কলিজা খাচ্ছে। সে মরা মানুষের কলিজা ও মাংস খায়। শিরোনামে খবরটি ছাপা হওয়ার পরই কৃতপক্ষের টন অফ নড়তে দুদিন লেগে যায়। অবশেষে গ্রেফতার করা হয় খলিলুল্লাহকে এবং এই মানুষ খেকো নরখাদককে মানসিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় পাবনা হাসপাতালে। সে ২০০৫ সালে মারা যায়।
খলিলুল্লাহের নরখাদক হওয়ার গল্প
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গতে ঘুরে বেড়া তো খলিলুল্লাহ। মাঝেমধ্যেও মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গেও যেত।সে মরা মানুষের পোস্টমর্টেম হওয়ার পর কাটাছেঁড়া নরম মাংস কিংবা কলিজা খেয়ে তৃপ্তি পেতো।মর্গের ডোমরা লাশ থেকে বিশেষ মাংস কেটে দিতে খলিলুল্লাহর হাতে। এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা মেডিকেলের ২-৪জন কর্মচারী টানলেও পাগল বলে ঘটনাটির পাত্তা দিতেন না । পরে সংবাদমাধ্যমে সারাদেশে তা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।গ্রেফতার হয় খলিলুল্লাহ। এরপর পাবনা পাগলা গারদে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে আবার ফিরে আসেন ঢাকায়। তবে এবার মর্গে নয়, সে ঠাই নেয় আজিমপুর কবরস্থানে। কবরস্থানের ফটকে ভিক্ষাবৃত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেখানেই তার শেষ জীবন অতিবাহিত হয়।
যেভাবে খলিলুল্লাহর নাম ছড়িয়ে পড়ে
১৯৭৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন আরিফুর রহমান। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও মাথায় লেখালেখি করার পোকা। সেই সুবাদে দৈনিক বাংলা মেডিকেল রিপোর্টার হয়ে হাসপাতালের প্রতিটি কক্ষ, বারান্দা, অলিগলি, বিভাগ, ও মাঠঘাট ঘুরে বেড়াতেন । তখন জানতে পারে, মেডিকেলের মর্গতে গভীর রাতে ভুতের আনাগোনা হয়। প্রথম প্রথম তিনি বিষয়টি আজগুবি হিসেবে উড়িয়ে দেন। কিন্তু পরে মেডিকেলের দু একজন ব্যাপারটি সত্য বলে জানান। তাই অনেকটা কৌতূহলবশত এ ভূতের সন্ধান করতে গিয়ে আরিফুর রহমান পেয়ে যান এক অবিশ্বাস্য ও শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী, যা শুনেভূতেরা ও পালিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।জলজ্যান্ত এক মানুষ লাশ ঘুরে এসে চুপি চুপি মরা মানুষের কলিজা খেয়ে যায়। তার নাম খলিলুল্লাহ। তারপর তিনি ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথেকথা বলে প্রমাণ পান খলিলুল্লাহ মরা মানুষের মাংস খায়। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সন্ধানে নামেতৎকালীন দৈনিক বাংলার তরুণ সাংবাদিকরা। তারা সবার সাথে কথা বলেন, এমন কি একাধিকবার খলিলুল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী সবার মতামতের ভিত্তিতে তৈরি করেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। ১৯৭৫ সালের ১৩ এপ্রিল সংখ্যা দৈনিক বাংলায় ছাপা হয় ও দৈনিক বাংলার সংযোগী ম্যাগাজিন সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ১৮ই এপ্রিল, ১৯৭৫ সংখ্যায় প্রচ্ছদ হিসেবে কাহিনী ছাপা হলে সারাদেশে হইচই পড়ে যায়।