ইসলামিক নামের তাৎপর্য । স দিয়ে ছেলেদের কিছু ইসলামিক নাম অর্থ সহ
ইসলামিক নাম হল মুসলিম ধর্মের অনুযায়ী দেওয়া নাম যা আল্লাহর নাম ও সুন্নাহ বলে পরিচিত। ইসলামিক নাম অর্থবহ ও মানে ধারণ করে একজন শিশুর বা ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে আল্লাহর রহমত, সুন্নাত, ইসলামিক ঐক্য, জ্ঞান, দানশীলতা, সত্যবাদীতা, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি প্রতিফলিত করতে পারে। ইসলামিক নাম যেমন আব্দুল্লাহ, মুহাম্মাদ, ফাতিমা, আয়শা, আলি, উমর, খাদিজা, বিলাল, জাবির, আবুবকর, উম্মু সালামা ইত্যাদি হতে পারে।
ইসলামিক নাম অর্থবহ নাম, যা ইসলাম ধর্মের প্রথম কেবল আল্লাহর নাম দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়াও, কুরআন ও হাদীসের আলোকে এই নামগুলো বাছাই করা হয়েছে যা সমস্ত মুসলমানদের জীবন ও চরিত্রের উন্নয়ন করতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও, বাংলাদেশে এই নামগুলো একটি সামাজিক অভিধান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ইসলামিক নাম দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল মুসলিম অভিভাবকদের তাদের সন্তানের প্রতি ইসলামের আদর্শ, সংস্কৃতি, উপস্থাপনা এবং প্রবণতা বোঝার সুযোগ দেয়া। এছাড়াও এই নামগুলো একটি শিশুর চরিত্র, শুভচিন্তার এবং আদর্শগুলোর প্রতিফলন হিসাবে কাজ করে যা তার জীবনে উন্নয়ন করবে। ইসলামিক নাম দেওয়ার সময় কখনও নামের অর্থ, ইতিহাস, শব্দসংক্রম এবং নামের গুরুত্ব অনেক।
এছাড়াও, ইসলামিক নাম নির্দিষ্ট বিষয়ে বা গুণগত স্বভাব অনুযায়ী দেওয়া হয় যেমন ইব্রাহিম (প্রিয় ব্যক্তি), জাকির (স্মরণশীল), হামিদ (প্রশংসা করা), সামি (জ্ঞানী) ইত্যাদি।
মুসলিম ধর্মে ইসলামিক নামের অনেকগুলি ফযিলত বিদ্যমান। কিছু ফযিলত হলঃ
১. আল্লাহর নাম দেওয়া: ইসলামিক নাম সাধারণত আল্লাহর নাম বা তার গুণগত সূচনা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এদের মাধ্যমে বাচক অবশ্যই আল্লাহর নাম ও তার গুণগত সূচনার মধ্যে থাকবে এবং প্রতি সময় আল্লাহর স্মরণ করতে অনুপ্রাণিত হবে।
২. সুন্নাতের মুখানুসার: ইসলামিক নাম সাধারণত প্রিয় নবীদের নাম অথবা তাদের কোনো সুন্নাত বা আদব অনুযায়ী দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বাচক নবীদের স্মরণে থাকবে এবং তাদের সুন্নাত অনুসরণ করতে উৎসাহিত হবে।
৩. মানসিক স্থিতিতে শান্তি এবং তাকওয়া: ইসলামিক নাম দেওয়া একটি কঠিন নিয়ম অনুসরণ করা। একজন মুসলিম অবশ্যই ইসলামিক নাম দেওয়া নামে থাকবে।
স দিয়ে ছেলেদের কিছু ইসলামিক নাম অর্থ সহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
সাইম (অর্থঃ রোজাদার)
সাইয়েদ (অর্থঃ নেতা কর্তা)
সাঈদ (অর্থঃ সৌভাগ্যবান)
সাকিব (অর্থঃ উজ্জ্বল)
সাখাওয়াত (অর্থঃ দানশীলতা)
সাদ (অর্থঃ অভিনন্দন)
সুফিয়ান (অর্থঃ দ্রদ্রুত চলমান)
সালমান (অর্থঃ সাহাবির নাম)
সাহিল (অর্থঃ নেতা)
সাজেদ (অর্থঃ সেজদাকারী)
সাদাত (অর্থঃ নেতা)
সাকী (অর্থঃ শান্ত)
সালিম (অর্থঃ ধার্মিক)
সামি (অর্থঃ মহিমান্বিত)
সাজ্জাদ (অর্থঃ অধিক সেজদাকারী)
সিরাজ (অর্থঃ বদান্যতা)
সাউদ (অর্থঃ সাহাবির নাম)
সুলতান (অর্থঃ শাসক)
সুলায়মান (অর্থঃ শান্তিপূর্ণ)
সামির (অর্থঃ ভালো বন্ধু)
সিনান (অর্থঃ চিতাবাঘ)
সাদেক (অর্থঃ বন্ধু)
সাফায়েত (অর্থঃ সুপারিশ)
সালেহ (অর্থঃ সত্যবাদী)
সাদ্দাম (অর্থঃ মনোযোগী)
সাফওয়ান (অর্থঃ বিশুদ্ধ)
সিফাত (অর্থঃ গুণাবলী)
সিদ্দিক (অর্থঃ বিশ্বস্ত)
সাইফুল (অর্থঃ শান্তির তরবারি)
শোয়েব (অর্থঃ আল্লাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত)
সামিউল (অর্থঃ আল্লাহর কথা শুনে যে ব্যক্তি)
সরোয়ার (অর্থঃ নেতা)
সরফরাজ (অর্থঃ মহৎ)
সাদমান (অর্থঃ আনন্দিত)
সানি (অর্থঃ উজ্জ্বল রৌদ্র)
সালাউদ্দিন (অর্থঃ বিশ্বাসের সরলতা)
সামাদ (অর্থঃ ইচ্ছার দৃঢ়তা)
সগীর (অর্থঃ সাহাবীর নাম)
সোহেল (অর্থঃ নক্ষত্র)
সাফওয়াত (অর্থঃ গুণাবলী)
সূফী (অর্থঃ শন শওকত)
সাদি (অর্থঃ সফল)
সাদাফ (অর্থঃ ঝিনুক)
সাব্বির (অর্থঃ ধৈর্যশীল)
সাহাবা (অর্থঃ সহচর)
সাহাল (অর্থঃ সহজ)
সাবিত (অর্থঃ স্থিতিশীল)
সাবুর (অর্থঃ ধৈর্যশীল)
সিয়াম (অর্থঃ রোজা)
সফী (অর্থঃ ঘনিষ্ঠ বন্ধু)
সবুজ (অর্থঃ শ্যামল)
সরফরাজ (অর্থঃ সম্মানিত)
সাইফ (অর্থঃ তরবারি)
সাইয়েদ (অর্থঃ নেতা)
সাজিদ (অর্থঃ সেজদাকারী)
সাজীদুল হক (অর্থঃ সত্যবাদী আল্লাহকে সেজদাকারী)
সাজিদুর রহমান (অর্থঃ আল্লাহ কে সেজদাকারী)
সাজ্জাদুল করিম (অর্থঃ দয়াময় আল্লাহ কে অধিক সেজদাকারী)
সাত্তার (অর্থঃ দোষ গোপনকারী)
আব্দুস সাত্তার (অর্থঃ দোষ গোপনকারী আল্লাহর বান্দা)
সাদাদ (অর্থঃ উপযোগীতা)
সাদাত (অর্থঃ সুখ)
নাজমুস সাদাত (অর্থঃ সৌভাগ্যবান তারকা)
সাদ (অর্থঃ সুখ)
সাদমান (অর্থঃ অনুতপ্ত)
সানী (অর্থঃ মর্যাদাবান)
সাবেত (অর্থঃ দৃঢ়)
সালমান (অর্থঃ নিরাপদ)
সালাম (অর্থঃ শান্তি)
সেলিম (অর্থঃ নিরাপদ)
সুজন (অর্থঃ জ্ঞানী)
সুমন (অর্থঃ উত্তম মনের অধিকারী)
সৈয়দ (অর্থঃ নেতা)
সোহাগ (অর্থঃ আদর)
সৌরভ (অর্থঃ সুভাস)
সগীর (অর্থঃ ছোট)
সফি (অর্থঃ পাক পবিত্র)
সফিউর রহমান (অর্থঃ করুণাময় আল্লাহর বন্ধু)
সাফা (অর্থঃ পাক পবিত্র)
সারওয়াত (অর্থঃ ধন)
সাইফুদ্দিন (অর্থঃ ধর্মের তরবারি)
সাইফুন্নবী (অর্থঃ নবীর তরবারী)
সাইফুর রহমান (অর্থঃ করুণাময় আল্লাহর তরবারী)
সাইফুল ইসলাম (অর্থঃ ইসলামের তরবারী)
সাইফুল হক (অর্থঃ সত্যের তরবারী)
সাইফুল্লাহ (অর্থঃ আল্লাহর তরবারী)
সাইমুম (অর্থঃ মরুঝড়)
সাইয়েদুজ্জামান (অর্থঃ যুগের নেতা)
সাইয়েদুল ইসলাম (অর্থঃ ইসলামের নেতা)
সাইয়েদুল হক (অর্থঃ সত্যের নেতা)
সাঈদুর রহমান (অর্থঃ করুণাময় আল্লাহর সুখী বান্দা)
সাউদ (অর্থঃ সুখী)
সাকী (অর্থঃ শান্ত)
সাফাওয়াত (অর্থঃ ফুল)
সাদাতুল্লাহ (অর্থঃ আল্লাহর প্রশান্তি)
সানা (অর্থঃ প্রশংসা)
সানাউল্লাহ (অর্থঃ আল্লাহর গৌরব)
সাবিত (অর্থঃ অটল)
সাবের (অর্থঃ ধৈর্যশীল)
সায়েম (অর্থঃ স্বাধীন ভাবে বিচরণ কারী)
সালামত (অর্থঃ নিরাপত্তা)
সালিম (অর্থঃ অক্ষত)
সালেম (অর্থঃ সুস্থ)
সালাহ (অর্থঃ সর্দার)
সাহের (অর্থঃ সজাগ)
সাদ (অর্থঃ সৌভাগ্য)
সিরাজ (অর্থঃ বাতি)
সিরাজুদ্দীন (অর্থঃ ধর্মের প্রদীপ)
সিরাজুল ইসলাম (অর্থঃ ইসলামের প্রদীপ)
সিরাজুল হক (অর্থঃ সত্যের প্রদীপ)
সিরাজুল সালেহীন (অর্থঃ সৎ লোকের প্রদীপ)
সুজাউদ্দৌলা (অর্থঃ রাজবির)
সুবহান (অর্থঃ প্রশংসা)
আব্দুস সুবহান (অর্থঃ প্রশংসিত বান্দা)
সুলতান মাহমুদ (অর্থঃ প্রশংসিত সম্রাট)
সুহাইব (অর্থঃ একজন সাহাবির নাম)
শুহায়েল (অর্থঃ শুকতারা)
সুআদ (অর্থঃ সুখী)
সেকেন্দার (অর্থঃ সম্রাট)
সোহরাব (অর্থঃ পারস্যের এক বীরের নাম)
সিদ্দিক আহমেদ (অর্থঃ প্রশংসিত একটি নক্ষত্র)
সিদ্দিকুর রহমান (অর্থঃ প্রশংসিত সত্যবাদী)
সৈকত (অর্থঃ সমুদ্রের তীর)
সালামত উল্লাহ (অর্থঃ অধিক প্রশংসিত বাদশাহ)
শামসুদ্দিন (অর্থঃ দ্বীনের উচ্চতর)
কুরআন ও হাদীসের আলোকে ইসলামিক নাম অনেক বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। নিচে কিছু সাধারণ ছেলেদের ইসলামিক নামের উল্লেখ করা হলোঃ
- আব্দুল (অর্থ: আল্লাহর দাস)
- আহমদ (অর্থ: প্রশংসিত)
- মুহাম্মদ (অর্থ: প্রশংসিত ব্যক্তি)
- আলি (অর্থ: উচ্চ মর্যাদা বিশিষ্ট)
- হাসান (অর্থ: প্রিয়)
- হুসাইন (অর্থ: অতুলনীয়)
- উমর (অর্থ: দৃঢ় ইমান বিশিষ্ট)
- আবুবকর (অর্থ: মানুষের বাবার সাথে সম্পর্কিত)
- উসমান (অর্থ: দৃঢ় ইমান বিশিষ্ট)
- আলমগীর (অর্থ: আল্লাহর মহান নাম)
এছাড়াও, আরও অনেক ইসলামিক নাম রয়েছে যেগুলো কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।